Friday, December 4, 2015

 হিমেল হাওয়া মাঙ্কি টুপি 




কলকাতায় সেরকম শীত পরে না শুনি  আজকাল,  সেরকম করে নাকি  কাক ভোরে কুয়াশা হয় না আগের মতো ,
আগের মতো মানে কত দুরের কথা সেসব , ওই যখন স্কুল এ পড়তাম সেই সব দিন আর কি ,  ভোরের স্কুল , ৬ টা ৫  এর প্রেয়ার , এক গ্লাস গরম দুধ  আর মাঙ্কি টুপি। মনে নেই মিল্টন এর ওয়াটার বোতল পাওয়া যেতো , duckbag এর ব্যাগ , রাস্তায় জুতোর ফিতে খুলে গেলে বাবা নিচু হয়ে জুতোর ফিতে বেঁধে দিতো , মুখ দিয়ে ধোঁওয়া ছেড়ে বলতাম আমিও তোমার মতো সিগরেট খাচ্ছি , এই সব কত দিন আর আগের কথা , ছুটির দিনে আমার একতলা বাড়ির ছাদে রোদে দেওয়া সব লেপ তোষকের মাঝে সেই শুয়ে শুয়ে কমলালেবু খাবার দিন কি তবে শেষ বিকেলের শীত এর সাথে মিলিয়ে গেল. হতেই পারে না , এই তো কিছুদিন আগেও শীত পড়লে  বাড়িতে একটা নেসকাফের ছোট কৌটো আসত , বাবা অফিস থেকে ফেরার পর মাঝে মাঝে আমিও ভাগ পেতাম , বিশ্বাস করুন এত সাহেব মনে  হত না  নিজেকে , ফেনা ওঠা নেসকাফে র থেকে ভালো কিছু আমি আর এ জন্মে খেয়েছি নাকি মনে করতে পারি না , যদিও আমারটাতে ভীষণ বেশি দুধ আর চিনি থাকত , তখন থেকে ছেলের জিভটা তৈরি হয়েছিল বলেই না সে আজকাল দেশে বিদেশে ঘুরে বেড়ায় , কায়দা করে star bucks এ গিয়ে মুখ বদলাতে সে আবার নাকি chai late খাচ্ছে, সে যখন জাপানে ছিল একবার green tea টা চেষ্টা করেছিল , পারে নি , কিন্তু সে হেরে যায় নি, কলকাতার শীত বুকের ভেতর কড়া নাড়লেই সে একটা chai late এ খেয়ে নেয়।  আজ থেকে বছর ১৫ আগে মায়ের যে উলের  শালগুলো  ঝেড়ে পরে  পাড়ায় আড্ডা দিতে বেরোত , তার গন্ধ ভেসে এলে সে hood টা মাথার ওপর টেনে নেয় , তবু এই হ্তছাড়ার দেশে ঠান্ডা কিছুতে মরে না।  আজও মায়ের শাল থেকে একটু দুরে তার বইমেলা শুয়ে থাকে , টান টান ময়দান , ধুলো ধুলো আকাশ।
বইমেলা টাও দিক ভুল করে ধাপার দিকে চলে গেল, ইতিহাস হয়ে গেল জানেন, লিটল ম্যাগ হাতে কত গুলো ছেলের capstan এর প্যাকেট আর ৭ দিনের পাস পাওয়ার দিন, ওই পায়ের ছাপ আর হাওয়াই চটির দিন. ৫ টাকার ঘুগনি আর আলুর চপ ভাগ করে খাবার দিন , কলকাতায় কি তবে সেরকম শীত পরে না আজকাল।

শীত কাল বলতে একটা অবধারিত পিকনিক হত , সেই পাড়া পিকনিক , যেখানে মেয়েদের  সাথে ব্যাডমিন্টন খেলার সুযোগ পাওয়া যেত বছরে একবার , খিচুরী হত মশাই, শেষের দিকে আমরা যারা পরিবেশন করে খেতে বসতাম , একটা দুটো ঠান্ডা বেগুনি আর হলুদ রঙের কিছু একটা জলের মতো, খিচুড়ি ভেবে খেতাম , তৃপ্তি ছিল কিন্তু , matador এ উঠেই মাথায় একটা মাফলার এর পুঁটুলি করে নিতাম , সুন্দর দেখাত কিন্তু আমাদের , উপায় ও তো ছিল না , কলকাতায় তখন ১২ আর মফস্বলে তো আরো ১ ডিগ্রী কম , হতেই হবে গাছ পালা কত বলুন ,
এই সব দেশে আবার মাইনাস ২০-৩০ টেম্পারেচার হয় , কি বোকা বোকা না বাপারটা , একটা চিরহরিত গ্রীষ্মপ্রধান দেশের মফস্বলের ছেলে কে আর কত আতলামো না নিতে হবে , কি আর করা যাবে , বিদেশ বলে কথা বাবা , ঠান্ডা কি কলকাতার মতো এত সস্তা হবে নাকি।

জানেন , সেই যে খুব ছোটবেলা যখন মা আমার বেশ সাজগোজ করত , আমি বাবা আর মা শীতের সকালে ময়দান যেতাম , গঙ্গার ধার, outram ঘাট , মায়ের হাতের বাঁধা রুমালে এখনো বোধয় সেদিনের কমলালেবুর গন্ধ পাবেন , আমার শীতকাল বুঝি আজকাল সেখানেই থাকে, ময়দানের বুক চিরে যে ট্রাম তা খিদিরপুরের দিকে যায় সে কিছু শীতকাল নিয়ে গ্যাছে আমার। কিছুটা ক্লাস ১২ এ জীবনানন্দ খেয়ে নিয়েছে ,
কিছুটা পরে আছে colleger সিঁড়িতে , সেই যেবার নীলকার্ডিগান , মুখে শীতের রোদ , মুগ্ধতা আর বোরলিনে মাখামাখি হয়ে কিছু শীতকাল পরে আছে সেখানে।  কিছুটা তো বাবা নিয়ে চলে গেল তারায় ভরা আকাশের নিচে একা ফেলে , কিচুটা পার্ক স্ট্রিট এর নামে লিখে দিয়েছি , কিছুটা বড়দিন এর বেছে বেছে সব থেকে ছোট cake টাকে খাইয়েছি ,
কিছুটা বিলিয়েছি পাড়ার বন্ধুদের , বাকি টুকু শুধু নিজের শীত , যার ভাগ হয় না , যেটা অবুঝ কুয়াশার মতো নেমে আসে আর অসহায় বোঝায় , মন খারাপের ওপারে সান্তা ক্লস থাকে , তোমারও মোজা উপহারে ভরে যাবে একদিন , ঝকে ঝকে রোদ উঠবে খুব , সব কটা ফুটপাথ এর কুচো কাঁচার দল cake ভাগ করে খাবে , পার্কস্ট্রিটএ সেদিন বিকেল থেকে আলো জ্বলে  উঠবে ,  সেদিন কেউ আর একা হেঁটে বাড়ি ফিরবে না , সেদিন আমি আমার সব কটা ডাকনাম ফিরে পাব  আর আমার সব হারিয়ে যাওয়া বন্ধুরা এক পেগ বেশি খাবে আমার নামে ,  কে যে বলে কলকাতায় নাকি শীত পরে না আর ? 





















Tuesday, September 15, 2015

পুজোর টুকিটাকি

আসছে বছর আবার এসো 

                                                       

হে ঈশ্বর , আবার  পুজো আসছে, এই সর্বগ্রাসী পুজো মানে অবধারিত ভাবে মন এত খারাপ থাকবে , সেই খুচরো খুচরো ডিপ্রেসন , কেন যে বাঙালি হয়ে জন্মেছিলাম কে জানে , আর কেন এই বা জীবনের এত পুজো মিস করে ফেললাম, তাও জানি না , শুধু  জানি যেহেতু মুখ তুলে এক আকাশ দু বার দেখা যায় না, ফেলে আসা পুজো দুবার ফিরে আসে না গুরু।

বেঙ্গালুরু দুবার খেয়ে ফেলল ,জাপান একবার র এইবার এই অভাগার দেশটা পুজোটা মেরে দিল , বছর ২৩ এর পুজো আর বছর ৩২ এর পুজো কি এক হয়, হয় না , তাই যা চলে যায় তা আর আসে না গো , এই সব ভাবলে মনে একটা হাহাকার হয় , যেমন হাহাকার হয়েছিল পুরনো পাড়া ছেড়ে দেবার সময়. সামনের পাড়ার পুজোটা তো আমদের বাড়ির পুজোই ছিল ,

তখন না পুজোর সময় একটা হালকা হাওয়া দিত মন কেমনের , আসলে তখন শুভ্র শরত্কাল আর তোমার কথার শঙ্খচিল।
আমি ছোটবেলায় অবধারিত ভাবে জানতাম পুজো আসে গঙ্গার দিক থেকে , আমার বাড়ি থেকে ১০ মিনিট হাঁটলে গঙ্গা পরে যে , যে জেটি তে বসে আড্ডা মেরেছি কত , সেই সব যদিও গত জন্মের কথা , পুজো ভাবলেই আমি জানি না আজও  কেমন আমার ওই নদী টার কথা মনে পরে , কি উদাসীন বয়ে যায় এই একটা বিরক্তিকর শহরের বুক চিরে , তার পেটের ভেতর ঘুমোয় কত জন্মের মা দুর্গার  ভুক্তাবসেশ ,

এই এক একটা ভাসান, এক একটা পুজো শালা কত ইতিহাস হয়ে  গেল , শহরও উদাসীন , সে যেন সরকারী চাকরি করে , এই কদিন সাজতে হবে, সাজে,  তারপর রং মুছে চোযাল শক্ত করে বছরের বাকিটা সময় কাটিয়ে দেয়. আমরাই শুধু পারলাম না , এখনো মহালয়ার রাতে জ্বর আসে, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র এর গলা টিপতে ইচ্ছে করে , নিজের এর পেছনে লাথি মারতে ইচ্ছে করে , কিছু না করে বাড়ি ফিরে চুপ করে আর বাসন মাজা সম্ভব হচ্ছে না বস।

কিছুই তো পারি না তাই কবিতা লিখি নিজের ভাষায় , এই রকম কত লোক আছে ভাবলেই আজকাল হাসি পায় , মাথায় তাদের ছোটবেলার পুজো, কম্পিউটারএ কাশ ফুলের ওয়ালপেপার , যারা বাইরে আছেন তারা আবার আতলামো করে পুজোর দিনে মানিকদার ওই ছবিটা দেখবেন না কিন্তু। যেখানে আদিগন্ত মাঠে কাশ ফুল ছুঁয়ে দুটো ছেলে মেয়ে ছুটছে , "অপু রেল গাড়ি  দেখবি", বুকে গেঁথে যাবে , বহু  পেগ এর পর ও ওই নেশাটা নামে না  বস।  কত ছোটবেলা থেকে বলা হলো আমাকে, ভেব না, এত ভেব না তো তুমি। আর আমি কিনা না যে না ভেবে থাকতেই পারছি না।

আসলে coca cola থেকে cantharidin  অবধি এত অনিমেষ পুজো ঢুকিয়ে দেওয়া হলো না মাথায় আমি তাপস পাল হয়ে গেলাম , ছেলে ঢোকাতে না পারি পুজো ঢুকে গেল , আর একজন আমার মা , পুজোর দিন থেকে এত এত বার ওই জর্জদার "শরৎ তোমার অরুন আলোর অঞ্জলি " শোনালো , যে একবার ভাবলো না তার ছেলেটা বড় হয়ে বিদেশ যেতে পারে , তখন তার শোবার ঘরে মাঝ রাতে শরৎ এর মেঘ ঢুকে পড়বে ,একদম ঘুমোতে দেবে না , রোজ সকালে যে তাকে ক্লায়েন্ট প্যাদাতে হয় , তার কি এই সব বিলাসিতা মানায়।

বিলাসিতা না হয় করলাম না , বহুদূরের নিজের শহরে সব লোক ওই দিনে পুজো পুজো করে আদিখ্যেতা করবে তাই দেখে কি একটুও হিংসে হবে না বস এটাও মানতে পারলাম না , তাহলে বুঝব তুমি আর মানুষ নেই আশুতোষ রানা হয়ে গেছ , মাঝে মাঝে মনে হয় কই প্রবাসী পুজোতে তো এত মজা নেই, কিন্তু আন্তরিকতা তো কম থাকে না , এতগুলো মানুষ এতদিন ধরে এই প্রতিকূলতায় পুজো করে, ভাসান না হয় নাই থাকলো , আর ভাসানএ এমন কি বা হাতি ঘোড়া আছে , সেই তো পাড়ার পল্টু হালকা বাঙলা খেয়ে নাচবে, আর ফেরার পথে বাড়ি চিনতে পারবে না , হ্যা, এটাও সত্যি কথা প্রথম বার সেই বিকেলে ম্যাটাডোর এ ওঠার সময় সে কিন্তু তোমার এই হাত ধরেছিল, সে সব ক্লাস টেন, এই সব ফালতু কথা পুজোর সময় মাথায় না এলেই হলো।

আর সে সব কথা না ভাবাই ভালো , ছোটবেলার বিগত ৫ বছর পরপর ঢাকাই শাড়ি মুখ তুলে দেখল না মাইরি ,
এ পাশে অসুর আমি মূর্ছিত।  যাই হোক এখন লেভেল বেড়েছে , বিদেশে থাকে , ডলার কামায় , এখন হলে দেখিয়ে দিতাম এই সব ভেবে আমি কিন্তু বস হাত কামড়াই না পুজোর দিনে। আমি খুব লজিকাল , আমার মহালয়া CD আছে , আমার কাছে handy মা দুর্গার ছবি আছে , আমি নেট এ পুজো দেখে নেব।  আজকাল শিক্ষিত লোকেরা যা করে , আমি তো আর গ্রাম  এর মাল নই, পুজো এলেই হয়েছে, ঘাড়ে পাউডার মেখে বেরোব।

শুধু মাঝে মাঝে এখানেও বিকেল টা পুজো পুজো হয় , আকাশে ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘ , বাতাসে অন্য গন্ধ, বুকের খুব ভেতরে পুজো আসে , বন্ধ চোখের ভেতরে এখনো মা এসে মহালয়ার দিন ঘুম থেকে তোলে খুব সকালে , এখনো বাবা বাজার থেকে এসে মাকে বলে, পুজোর দিন একটু চা খাওয়াবে না , আমাদের মধ্যবিত্ত বাড়িতে এখনো পুজোর দিনে লুচি হয় , এখনো বুকের অনেক ভেতরে যে বসত বাড়ির জন্য জমি কিনে রেখেছি, তার চারদিকে এই সময় কাশের বন, দুরে ঢাকের আওয়াজ , সেটা কিন্তু মৃত্যুর ওপার থেকে শোনা যায় ,

আমি হাটতে থাকি একা , পেছনে ত্রিভুজ এর মতো দেশ পরে থাকে, ত্রিসন্কুর মতো পরে থাকে চেনা শহর , সব চেনা আর অচেনা গলি গুলো তে বরফ পরে , চেনা বন্ধু ডাকনাম ধরে ডেকে ডেকে যায় , বাবা হাত বাড়িয়ে বলে  এই বার পুজোয় জুতো নিবি না কেন ? দুরে দুলতে থাকে মায়ের মুখ , সিঁদুর মাখা গঙ্গার জলে ভাসছে , সারা জীবন জুড়ে উড়তে থাকে কাপাস তুলোর মতো মেঘ. এই বুঝি পুজো ? এই বুঝি ভাসান ?











Monday, February 2, 2015

ফেলে আসা ধুমকেতু , মায়া কাজল


কালবৈশাখীর দিন , কালবৈশাখীর রাত

গরম কি তবে এসে গেল কলকাতায় ,  এখনো কি পশ্চিম লাল হয়ে এলে বুঝে নেব এই বার হাত ছাড়িয়ে উড়তে শুরু করবে বাদামের ঠোঙ্গা , ময়দান চত্তর ফাঁকা হয়ে যাবে, কেউ কেউ তুমি এলেই জানলা খুলে দেয়,ওটা তার বুড়ো  বয়সে উড়তে না পারার  আপসোস।

এখনো বুঝি জানলার ধারে বসে আছে, সম্পর্কে আমার দাদু হতেন তিনি। পা দুটো গ্যাছে কয়েক  বছর হলো  , এই না বলে কয়ে হটাত করে অর্বাচীন এর মতো ঝড় এলে এখনো কে জানলা বন্ধ করে, জানা নেই। অবশ্য তার দরকারও নেই , কালবৈশাখীতে ভিজতে ভিজতে সম্পর্কের নিম গাছটা  মাথা দুলিয়ে দেখে বিছানা টা ফাঁকা। গত বারে পুড়িয়ে এলাম যে, কালবৈশাখী মাঝে মাঝে সব গুলিয়ে দেয়. ওটা ওর পুরনো বদ অভ্যেস।

সে কি খুব করুন সুরে আসে আজকাল, সে কি খুব একা হয়ে যাচ্ছে , সেও কি আমদের মতো বন্ধুহীনতায় ভোগে , তার ও বুঝি বাতের ব্যথা , বহুদিনের সঙ্গী চলে গ্যাছে কথা না রেখে, দরজা হাট  করে খুলে, সেটাও কোনো কালবৈশাখীর দিনে,
কালবৈশাখীর রাতে, কি irresponsible, সেও কি  তাকিয়ে থাকে জানলার বাইরে, শ্যাওলা ধরা সবুজ দেওয়ালের দিকে , একা থাকে সে , বয়স হয়েছে , রাতে একটু একটু ভয় ও লাগে, কাগজে তো আজকাল কত কিছু বেরোয় , ছেলেটা বহুদিন বাইরে। কি করে কি খায়।
কালবৈশাখী আমার মায়ের কথা মনে পরায়।

আমার ও জীবনে কাল বৈশাখী  ছিল , আমারও  একটা গোটা বই মেলা ছিল।  আমাদের পাড়াএয়  কত রবীন্দ্র জয়ন্তী ভেস্তে  গেল এই বাজে ঝড়টার জন্য  , যে মেয়েটা সুর করে কবিতা পরেছিল , "কিনু গোয়ালার গলি " , কত দিনের কালবৈশাখীর বাবধ্যান তার সাথে আজকে আমার। কি পারাপারহীন করে গ্যাছে এই কালবৈশাখীর দিন , কালবৈশাখীর রাত.
হাতের মুঠোর থেকে ফসকে গ্যাছে রোদের দিন , বাবার আঙ্গুল, ফসকে গ্যাছে কত ক্যাম্বিস এর বল , সেএই সব বন্ধুদের কথা মনে পড়ায়  কালবৈশাকি , যাদের সাথে প্রথম বার মদ খেয়েছি , লুকিয়ে দেখেছি বড়দের সিনেমা , স্কুল কেটেছি বহুবার , সেই সব রেলগাড়ির কথা মনে পরায়, টিকিট ফাকি দিয়েছি , ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থেকেছি অচেনা পাড়ায় , যদি সে আসে জানলআয় একবার।    কালবৈশাখীর দিন আমার প্রেমহীনতার কথা মনে পরায় , আজকে ঝাপসা কাঁচের বাষ্পে সেই সব বন্ধুদের কথা মনে পরে যাদের সাথে সত্যি আর কোনদিন দেখা হবে না , আমরা হারিয়ে গেছি সেই সব কালবৈশাখীর দিনে কালবৈশাখীর রাতে।


সুনীল গাঙ্গুলী চলে গেল। অসহায় কলকাতা  একা পরে আছে, তার ভাঙ্গা কালবৈশাখী , ভাঙ্গা ট্রাম লাইন ,
সারা জীবনের যত  কালবৈশাখী ছিল অধিকাংশ পুড়ে গ্যাছে , তার ছাই ওড়ে  প্রবাসী হাওয়ায় , মাঝে মাঝে নিবিড় জ্বরের মতো তার আনাগোনা , বুকের অনেক ভেতরে যেখানে বরফ থাকে , যেটা কাউকে বলা যায় না. যে সুর কোনদিন বাঁধা হবে না এরকম ভেতরে, এখনো মাঝে মাঝে পশিমের আকাশ লাল হয়ে আসে, হাত ছাড়িয়ে উড়ে যায় বাদামের ঠোঙ্গা , অসহায় ভিজতে থাকি আমরা, যাদের সাথে রোজ কথা হয় না , তাদের দেখআ  হয়ে যায় এরকম কোনো কালবৈশাখীর দিনে  আর কালবৈশাখীর রাতে।